দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলনে ছাত্রছাত্রীরা, সমর্থনে ABVP


নিজস্ব প্রতিনিধির রিপোর্ট

সমস্যার পাহাড় দূরিকরণে অবশেষে আন্দোলনে নামল ছাত্রছাত্রীরা। মূল গেইটে তালা ঝুলিয়ে ভেতরে আটকে রাখা হয় শিক্ষকদেরকে। সমর্থনে এগিয়ে এসেছে ABVP.

উল্লেখ্য যে ঊনকোটি জেলার কৈলাসহর মহকুমার জারুলতলী উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয় বেশ পূরনো স্কুল। এই বিদ্যালয়ের  বহু ছাত্রছাত্রীরা আজ সমাজে প্রতিষ্ঠিত। তবে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে পিছিয়ে পড়েছে এটি। সমস্যার পাহাড় মাথায় নিয়েই খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে বর্তমানে। শিক্ষক স্বল্পতা, টয়েলট সমস্যা, বিশুদ্ধ পানীয় জল সহ বিদ্যুৎ ও বাউন্ডারি ওয়ালের সমস্যা নিবারনে একাধিকবার ডেপুটেশন দেওয়া হলেও সবই অষ্টরম্ভা। 

জানা গেছে দুপুর বিভাগে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশমান পর্যন্ত মোট ছাত্র সংখ্যা ২৯০ জন। এই ২৯০ জনের জন্য শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছে মাত্র ১২ জন। তন্মধ্যে একাধিক শিক্ষককে কলুর বলদ বানিয়ে "আজ ইয়ে তো কাল ওহ" করে বিভিন্ন ইস্যুতে নিয়োগ রাখা হচ্ছে। ফলে ১২ জন শিক্ষক শিক্ষিকা হলেও গড়ে উপস্থিত থাকছেন আট থেকে নয় জন মাত্র। ফলে সোনালী ভবিষ্যৎ তো দূরের কথা, পিতলের ভবিষ্যতও সন্দেহ বলে নিন্দুকদের ধারণা।

পাশাপাশি কাঠ ফাটা এই রোদে বিশুদ্ধ পানীয় জল সহ বিদ্যুতের মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে। শিক্ষকদের স্টাফ রুমে ফ্যান ঘুরলেও ক্লাশ গুলির ফ্যান হা করে চেয়ে রয়েছে বলে খবর। ফলে পাঠ দান সহ শিক্ষা গ্রহনে এক অন্তরায় রয়েই যাচ্ছে। পাশাপাশি টয়লেটের সমস্যাটাও প্রবল বলে জানা গেছে। যেহেতু এটি একটি কম্বাইন্ড স্কুল, অর্থাৎ ছেলে মেয়েরা রয়েছে তাই শিক্ষা দপ্তরের উচিত ছিল পৃথক পৃথক টয়লেট রুমের ব্যবস্থা করা, সাথে শিক্ষক শিক্ষিকাদের জন্য পৃথক টয়লেটের সু-বন্দোবস্ত করা। কিন্ত সবই তো "হরিবোল হরিবোল" তালেই চলছে বলে খবর। তাজ্জবের ব্যাপার হল শিক্ষাঙ্গনকে সুরক্ষিত রাখতে বাউন্ডারি ওয়ালের প্রয়োজন থাকে সত্ত্বেও মুখ ঘুরিয়ে রেখেছে শিক্ষা দপ্তর।

সুষ্ঠু শিক্ষার প্রসার ঘটাতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কোটি কোটি টাকার প্রকল্প থাকলেও বিশেষতঃ মফস্বলের বিদ্যালয় গুলিতে চলছে চরম অরাজকতা। বিপরীতে রাজধানীর বিদ্যালয় গুলির হাল হকিকৎ কিন্তু একেবারেই নন্দনীয়। ঢালাও হারে চলছে শিক্ষা সংস্কৃতি, অথচ গ্রামীণ স্কুলগুলির হাল বুড়ো মাসির ফোকলা মুখের মতই। তত্রাচ সরকারের নেই কোন মাথা ব্যথা। গাল ভরা ভাষণ দানেই কেল্লাফতে, সরকারের উন্নয়নের ধারা যেন বয়ে নিয়ে আসেন চোখের সামনে।

এই ব্যাপারে ABVP পুরো সমর্থন যুগিয়েছে। তাদের দাবি গুলির সাথে একমত পোষণ করে প্রতিক্রিয়া দেন শিবানী দাস। ছাত্র ছাত্রীদের ওই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশকে সমর্থন করেছেন জারুলতলী পঞ্চায়েতের উপ প্রধান রাজকুমার সিনহা। বিদ্যালয়ের ইনচার্জ অনুকেশ মালাকার নিজেও তাদের ওই দাবি গুলির সাথে সহমত পোষণ করেছেন।

তবে আশ্চর্যের বিষয় হল সকাল এগারোটা থেকে চলা ওই আন্দোলনে অংশগ্রহনকারী ছাত্র ছাত্রী সহ ABVP কর্মীদের প্রতি এক প্রকার অনমনীয় মনোভাব পোষণ করেছে জেলা শিক্ষা দপ্তর। মাথার উপর আগুন সূর্য মামাকে নিয়েই গলা ফাটিয়ে যাচ্ছিল তারা, অথচ শিক্ষা দপ্তরের কোন আধিকারিককে দেখা যায়নি বিকেল তিনটে পর্যন্ত। জেলা শিক্ষা আধিকারিক প্রশান্ত কিলিকদার সহ এক ঝাঁক আধিকারিকগণ রাজধানীতে অবস্থান করছেন, কিন্ত চার ঘন্টার কাঠ ফাটা রোদ্রের ওই আন্দোলনকে ইতি দিতে কেউ নেই ছাত্র ছাত্রীদের পাশে। অবশেষে বিকেল তিনটে নাগাদ আই এস বেনীমাধব চক্রবর্তী ছুটে যান উপর মহলের আদেশে। তাদের দাবি গুলির যুক্তি সংগত তথা অতিসত্বর পূরণের আশ্বাস দানে পিছু হটেন আন্দোলনকারীরা।


 

Comments