সব প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়েছে বিদ্যুৎ

সমরজিৎ চৌধুরীর রিপোর্ট

নিজের দৃঢ় মনোভাব, অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও উদ্যমের কাছে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কোন প্রকার বাধাই হতে পারেনা। শারীরিক প্রতিবন্ধী হিসাবে হতদরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহন করেও সমস্ত প্রতিবন্ধকতা ও  বাধা বিপত্তিকে পেছনে ফেলে জীবনযুদ্ধে যে জয়লাভ করা যায়,সেটাই প্রমান করে দেখাচ্ছেন অমরপুর নগর পঞ্চায়েতের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড শান্তি পল্লীর বাসিন্দা ১০০ শতাংশ দিব্যাঙ্গন যুবক বিদ্যুৎ দাস। মাধ্যমিক উর্ত্তীর্ণ দিব্যাঙ্গন যুবক বিদ্যুৎ দাস সরকারের দিব্যাঙ্গন ভাতা সহ অন্যান্য সাহায্য সহযোগিতা পেলেও সরকারি চাকুরি থেকে আজও বঞ্চিত।  ২০০৭ সালে মাধ্যমিক উর্ত্তীর্ণ হয়ে সরকারি চাকুরির জন্য  অনেক চেষ্টা চরিত্র করে, নেতা মন্ত্রীদের নিকট বহু আকুতি, মিনতি করেও  দিব্যাঙ্গন বিদ্যুৎতের ভাগ্যে সিকে ছিড়েনি। জুটেনি সরকারি চাকুরির সুযোগ। কিন্তু সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে বিদ্যুৎতের উপর সাংসারিক চাপ,আর্থিক চাপ ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে চাকুরির আসায় বসে না থেকে,খেয়ে পরে বেঁচে থাকার তাগিদে কিছু একটা করে সৎভাবে অর্থ রোজগারের মাধ্যমে আর পাঁচটা হতদরিদ্র পরিবারের মত মাথা উঁচু করে বাঁচার জন্যই প্রতিদিন সূর্যোদয়ের সাথে সাথে পাড়ায় পাড়ায় সব্জি ফেরি করতে বেরিয়ে পড়েন। এক্ষেত্রে তার বাহন হল সরকারের দেওয়া হস্ত চালিত হুইল চেয়ারেটিই। নিজের হস্ত চালিত চেয়ারেটির বিভিন্ন স্থানে কাঠের বক্স তৈরি করে, বিভিন্ন রকমের টাটকা সব্জি নিয়ে প্রতিদিন ভোরে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে সব্জি ফেরি করেই পরিবারের অন্ন সংস্থানের পাশাপাশি আর্থিক স্বনির্ভর হওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন শতভাগ দিব্যাঙ্গন বিদ্যুৎ দাস। ব্যবসা কেমন হয়?  জানতে চাইলে বিদ্যুৎতের উত্তর, সরকারের দেওয়া দিব্যাঙ্গন ভাতা আর সব্জি ফেরি করে যে অর্থ পাওয়া যায়,  তাকে  সম্বল করেই পরিবার পরিজনদের নিয়ে বেঁচেবর্তে আছেন।  তবে হস্ত চালিত হুইলচেয়ার চালিয়ে বিভিন্ন পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে সব্জি ফেরি করতে খুবই কষ্ট হয় বলে জানান বিদ্যুৎ। কিন্তু ঘরে বসে থাকলে তো সংসার চলবে না। বেঁচে থাকার জন্য রোজগারতো করতেই হবে। তাই সমস্ত দুঃখ কষ্টকে নিত্য সঙ্গি করেই নিজের হস্ত চালিত হুইল চেয়ার নিয়েই রাস্তায় নেমে সব্জি ফেরি করে চলেছেন  গত দুই বছর ধরেই। বিদ্যুৎয়ের আক্ষেপ, যদি একটি যন্ত্র চালিত হুইল চেয়ার তার থাকতো তাহলে কষ্টের অনেকটাই লাগব হতো।


Comments