হিন্দুদের কোন অনুষ্ঠানেই মাইক বা লাউড স্পীকার বাজানো যাবে না, ফতোয়া জারি করল বাংলাদেশ

Retd Lt. Gen. Md Jahangir Alam Chowdhury, Bangladeshi Home Minister Advisor


উত্তম সিনহা, 11.09.2024

হিন্দুদের কোন অনুষ্ঠানেই মাইক বা লাউড স্পীকার বাজানো যাবে না। এই ফতোয়া জারি করল বাংলাদেশ।

তথাকথিত বাংলাদেশ স্বাধীন অভিপ্রায় নিয়ে সেখানকার অন্তর্বর্তী সরকার একের পর এক হিন্দু বিরোধী মনোভাব পোষণের পাশাপাশি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে ভারত বিরোধী মানসিকতা নিয়ে। বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় ৫১% মুসলমান এবং মাত্র ৮% শতাংশ হচ্ছে হিন্দু, যা ১৯৭১ সনে প্রায় ২৫% ছিল। মাত্র ৫৩ বছরেই প্রায় ১২% হিন্দু বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের হিন্দুরা না ওপারে ঠাঁই পাচ্ছেন, না এপারে।

বাংলাদেশের গৃহ মন্ত্রকের উপদেষ্টা অবসর প্রাপ্ত ল্যাফটানেন্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবার সেই দেশের হিন্দুদের ভাবাবেগ এবং ধর্মের উপর চরম আঘাত আনলেন। এক ভিডিও বার্তায় তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন যে মুসলমানদের নামাজ এবং আজান শুরু হবার ঠিক পাঁচ মিনিট পূর্বে হিন্দুদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান কিংবা মন্ত্রোচ্চারনে কোন প্রকার মাইক বা লাউড স্পীকার বাজানো যাবে না। যতক্ষণ না তাদের নামাজ কিংবা আজান শেষ হচ্ছে, ততক্ষণ এই নিষেধাজ্ঞা মানতে হবে। অন্যথায় পুলিশ কোনপ্রকার ওয়ারেন্ট ছাড়াই তাদেরকে (হিন্দুদেরকে) গ্রেফতার করবে।


বিভিন্ন সূত্র মোতাবেক, আসন্ন দূর্গোৎসবের দিনগুলিতেও ওই আদেশ মানতে হবে।অর্থাৎ সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর মর্জিমাফিক ছড়ি ঘোরাচ্ছে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা বলে অভিযোগ।

অথচ ২০১৭ সনে যেদিন দূর্গা দেবীর নিরঞ্জনের দিন ছিল, সেদিনই মোহর্রমের মিছিল বেরুবে পশ্চিম বঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ফয়সালা করেন যে আগে মোহর্রমের মিছিল বেরুবে, তার পরদিন দূর্গা মূর্তি বিসর্জন হবে।

ওপারে হিন্দুদের উপর এহেন অমানবিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের পরও মানবাধিকার কমিশনগুলি জাগছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। সেখানে মা বোনদের উপর পাশবিক লালসা চরিতার্থের মত ন্যাক্কারজনক ঘটনাবলী ঘটেছে, অথচ নেই কোন জোরালো প্রতিবাদ। অথচ নিজের ধর্মকে রক্ষা করার জন্য আহ্বান জানাতেই ত্রিপুরা রাজ্যের মন্ত্রী সুধাংশু দাসের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে হিন্দু বিরোধী হিন্দুরাই। এই অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।





এরমধ্যে চলতি মাসের ঊনিশ তারিখে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ভারতে আসছে টেষ্ট সিরিজ খেলতে। বাংলার দলকে ঊষ্ণ সংবর্ধনা জানাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বিসিসিআই সহ ভারত সরকার। হিন্দু রমণীরা তাদের মোহময়ী রূপে গুণে নৃত্যে অভ্যর্থনা জানাবেন বাংলার দলকে। এটাই তো সেকুলার দেশের সেকুলারিজম বলে গুঞ্জন চলছে। ভারতের বিভিন্ন মহল থেকে ওই টেষ্ট সিরিজকে ধিক্কার জানাবার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে খবর রয়েছে। পাশাপাশি কোন টিভি চ্যানেল বা ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও যেন তা টেলিকাষ্ট না করা হয় তারও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

সেই দেশে সংখ্যালঘু হিন্দুরা যে মাথায় ঝুলন্ত তলোয়ার নিয়ে দিন গুজরান করে চলেছেন, এবারের দূর্গোৎসবে প্যান্ডেলের সংখ্যা থেকেই তা স্পষ্ট বলে খবর। কেননা গত বছর যেখানে প্রায় পঁয়ত্রিশ হাজারেরও অধিক দূর্গা পূজোর প্যান্ডেল ছিল, এবার তা এক লাফে নেমে এসেছে কুড়ি হাজারের কোটায়। অনেকে আবার পূজো করতেও ভয় পাচ্ছেন। ফলে বাংলাদেশে দূর্গার আগমন যে ফিকে হয়ে গেছে, তা পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট।

ফলে হিন্দদের উৎসবে মাইক বা লাউড স্পীকার ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলোয়াররা এই দেশে কি উচিত মর্যাদার হকদার? তা বিবেচনা করবেন এ দেশের জনগণ।





 

Comments